Tuesday, December 3, 2024
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
Homeলিডনিউজসুনামগঞ্জে প্রবাসীর স্ত্রী হত্যাকারীর ফাঁসি চান এলাকাবাসী

সুনামগঞ্জে প্রবাসীর স্ত্রী হত্যাকারীর ফাঁসি চান এলাকাবাসী

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে শাহনাজ পারভিনের লোমহর্ষক হত্যা কান্ডের ঘটনায় স্তম্ভিত জগন্নাথপুর বাসী। এত বিভৎস দৃশ্য আগে দেখেনি কেউ। এই নির্মম নৃশংস ঘটনায় এলাকা বাসী আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিলারদের গ্রেফতারে সাড়াশি অভিযান শুরু করেছে। একই সাথে হত্যার কারণ খোঁজে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

শুক্রবার শাহনাজ হত্যার মূল ঘাতক অভি মেডিকেলের মালিক জিতেশ গোপকে ঢাকা থেকে সিআইডির একটি টিম গ্রেফতার করেছে। এই নৃশংসতম হত্যাকান্ডের ঘাতক দের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালেরর মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারকার্য সম্পন্ন করে কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌরশহরের মির্জা আব্দুল মতিন মার্কেটের অভি মেডিকেল হল নামক ফার্মেসি থেকে সৌদিআরব প্রবাসী সুরুক মিয়ার স্ত্রী ৩ সন্তানের জননী শাহনাজ পারভিন জোসনার ৬ টুকরা লাশ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজেদুল করিমের উপস্হিতিতে ঘরের তালা ভেঙে উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় লাশের গায়ে কোনো কাপড় ছিলো না। ৬ টুকরো লাশ দেখে উপস্হিত সবাই স্তম্ভিত হয়ে যান। কোন মানুষ এভাবে মানুষকে এত নিষ্ঠুর ভাবে হত্যা করতে পারে উপস্হিত শত শত এলাকাবাসীর মধ্যে এই প্রশ্নই বার বার ঘুরপাক খাচ্ছিল ।

তালাবদ্ধ ফার্মেসি থেকে উদ্ধার করা প্রবাসীর স্ত্রীর লাশের হাত, পা, মাথা, সব আলাদা। এতো নৃশংস খুন আর বিভৎস দৃশ্য আগে কেউ দেখেনি বলে মন্তব্য জগন্নাথপুরের মানুষের। বুধবার বিকেল থেকে শাহনাজ পারভিন নিখোঁজ ছিলেন। তার স্বামী সৌদিআরব প্রবাসী। তিনি তিন সন্তান নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে জগন্নাথপুর পৌরসভার পিছনের আবাসিক এলাকায় নিজস্ব দুতল বাসায় বসবাস করে আসছেন।

নিহত শাহনাজ পারভিনের ছেলে উদয় জানান, গত বুধবার সকালে অভি মেডিকেল হলের মালিক জিতেন্দ্র গোপ তাদের বাসায় গিয়ে শাহনাজ পারভিনের ব্লাড প্রেশার মাপেন। পরে তিনি পারভিনকে দোকানে যাওয়ার কথা বলে চলে যান। বিকেলে ঔষুধ আনার উদ্দেশে পারভিন ঘর থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। রাতে উদয় তার মায়ের মোবাইল ফোনে কল দিলেও কেউ রিসিভি করেননি। বিষয়টি উদয় থানাপুলিশকে জানান। পরে বৃহস্পতিবার পুলিশ জিতেশ গোপের ফার্মেসি থেকে পারভিনের খন্ড-বিখন্ড লাশ উদ্ধার করে।
খুন হওয়া পারভিনের স্বামী সুরুক মিয়ার বাড়ি উপজেলার নারিকেল তলা গ্রামে।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে অভি মেডিকেলের তালা ভেঙে প্রবেশ করলে দেখতে পাওয়া যায়, মহিলার দেহটি ছয় খণ্ড করা। দুই হাত ও পা আলাদা করে কাটা, মাথা এক খণ্ড, কোমর থেকে বুক পর্যন্ত আরেক খণ্ড। পরনে কোনো কাপড় ছিলো না।
পারভিন নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে অভি মেডিকেল হলের মালিক জিতেশ তার পরিবার নিয়ে জগন্নাথপুর থেকে পালিয়ে যায়।

এদিকে, নিহতের ভাই হেলাল মিয়া বলেন, বুধবার বেলা ৩টার দিকে আমার বোনকে অভি মেডিকেলের মালিক জিতেশ চন্দ্র গোপ অভি ফোন করে তার ফার্মেসিতে নিয়ে যান। এরপর আমার বোন আর বাসায় ফেরেনি। রাতে খোঁজাখুঁজির পর অভির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি আমার বোনকে ফিরিয়ে দেবেন বলে বৃহস্পতিবার সকালে পৌরশহরের একটি বাজারে যেতে বলেন।

সকালে বাজারে গিয়ে প্রায় ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করার পর অভিকে ফোন দেই, কিন্তু ফোন বন্ধ পাই। পরে পুলিশ নিয়ে তার বাসায় গিয়ে দেখি বাসার দরজায় তালা লাগানো। তখন আমাদের সন্দেহ হয়। দুপুরে বাজারে তার ফার্মেসিতে গিয়ে তালা ভেঙে আমার বোনের টুকরা টুকরা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্র জানায়, জিতেশ গোপ কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার সইলা গ্রামের যাদব গোপের ছেলে। ৯ বছর জগন্নাথপুর বাজারের বিভিন্ন ওষুধের দোকানে চাকরির পর গত এক বছর ধরে জগন্নাথপুর পৌরশহরের মির্জা আব্দুল মতিন মার্কেটে অভি মেডিকেল হল নামে একটি ফার্মেসি খুলে নিজে ব্যবসা শুরু করে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments