আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত। করোনার মধ্যে দেড় বছর আগে এই মরণব্যাধি সম্পর্কে জানতে পারেন তিনি। বিষয়টি পারিবারিকভাবেই গোপন রাখা হয়েছে। বর্তমানে ভাইবোনদের চেষ্টাতে চলছে মুহিতের চিকিৎসা। চিকিৎসকরা বলছেন, সাবেক এ অর্থমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা ভালো নয়।
তা সত্ত্বেও সোমবার জন্মভূমি সিলেট গেছেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। ক্যানসার পুরো লিভারে ছড়িয়ে পড়ায় মৃত্যুভয় তাকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। শুক্রবার তার ঢাকা ফেরার কথা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভার বিভাগের চেয়ারম্যান ও দেশে লিভার ক্যানসারের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক মামুন আল মাহতাব বুধবার যুগান্তরকে বলেন, সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের লিভারের ক্যানসার বর্তমানে যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থায় চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রয়োজন রোগীর প্রবল ইচ্ছে। মুহিত সাহেব সক্রিয় রয়েছেন।
সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ছোট ভাই পল্লী শিশু ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ও ঢাকা ডেল্টা হসপিটাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান এএসএ মুয়িয সুজন বলেন, দেড় বছর আগে লিভার ক্যানসারের কথা জানতে পারেন তারা। ইচ্ছে ছিল লন্ডনে গিয়ে চিকিৎসা করানোর। কিন্তু তা আর হয়ে উঠেনি।
গত বছর জুলাইয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সে সময় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। সর্বশেষ গত সপ্তাহে ঢাকার গ্রীন লাইফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী। শুক্রবার ছেলে শাহেদ মুহিত এক প্রকার সবার ইচ্ছের বিরুদ্ধে তার পিতাকে বনানীর বাসায় নিয়ে যান। আবুল মাল আবদুল মুহিতের চিকিৎসা করেছেন এমন একজন চিকিৎসক বলেন, হাসপাতালে রেখে তার (আবুল মাল আবদুল মুহিত) আরও চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল।
ছোটভাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন হাসপাতালে অগ্রজকে দেখে এসে তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে সাবেক অর্থমন্ত্রীর একটি ছবি আপলোড করেন। সেখানে হাসপাতালের শয্যায় ক্ষীণকায় আবুল মাল আবদুল মুহিতকে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।
ওই সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আবদুল মোমেন বলেন, তিনি (সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত) খুব ভালো আছেন। তার মেজর কোনো অসুখ নেই। আগে যেসব অসুখগুলো ছিল সেগুলো কোনোটাই নেই। ডায়াবেটিস, প্রেসার কিছুই নেই। তবে তিনি অত্যন্ত দুর্বল। কারণ তার খাওয়া-দাওয়ার ঠিক নেই। অনেক দিন ধরে খাওয়া-দাওয়া করেন না। ফলে তার ওজন খুবই কমে গেছে।
অর্থমন্ত্রী হিসাবে আবুল মাল আবদুল মুহিত ১২টি বাজেট উপস্থাপন করেন, যার ১০টি ছিল আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য। তার ছেড়ে দেওয়া আসন থেকে গত নির্বাচনে জয়ী হন ছোট ভাই ড. একে আবদুল মোমেন। এরপর একে আবদুল মোমেন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। আবুল মাল আবদুল মুহিতের জন্ম ১৯৩৪ সালের ২৫ জানুয়ারি সিলেটে।