চরম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়া শ্রীলঙ্কায় সরকার হঠানোর আন্দোলন হঠাৎ করেই সহিংস হয়ে উঠেছে। মাহিন্দা রাজাপাকসে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পরেও দেশটিতে বিক্ষোভ এখনও থামেনি। গত সোমবার থেকে তার পদত্যাগের পর ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় একজন সরকার দলীয় এমপির প্রাণহানিসহ কমপক্ষে দুই শতাধিক মানুষ হতাহত হয়েছেন।
মানুষজন কারফিউ ভেঙ্গে রাজধানী কলম্বোতে রাস্তায় নেমে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসেরও পদত্যাগ দাবি করছে। শ্রীলঙ্কায় লুটপাট, সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর বা অন্যের ওপর হামলা করতে দেখলে নিরাপত্তা বাহিনীকে গুলি চালানোর নির্দেশ জারি করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের ভবন অবরোধ করে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছে। তারা বলছে গোতাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভ থামবে না।
এদিকে বিক্ষোভকারীরা শ্রীলঙ্কার উত্তর-পূর্বে ত্রিঙ্কোমালির অত্যন্ত সুরক্ষিত নৌবাহিনীর একটি ঘাঁটির সামনে জড়ো হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। কারণ এরকম একটা খবর ছড়িয়ে পড়েছে যে মাহিন্দা রাজাপাকসে তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে সেখানে বিপুল সংখ্যক বিক্ষোভকারীকে জড়ো হতে দেখা যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কায় জ্বালানি, ওষুধপত্রসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের চরম সংকট নিয়ে মানুষের ক্ষোভ এখন তুঙ্গে এবং দেশটির লাখ লাখ মানুষ বিক্ষোভে শামিল হয়েছে। ১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট চলছে দেশটিতে। জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ ব্যাপক ক্ষুব্ধ।
সরকার অর্থনৈতিক দুরবস্থার জন্য করোনা মহামারিতে দেশটির পর্যটন বাণিজ্য ধসে পড়াকে দায়ী করলেও বেশিরভাগ মানুষই সরকারের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনাকে এর জন্য দায়ী করছে।