নাটোরে অভিনব কায়দায় এক মহিলার ৫০ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের কয়েক ঘণ্টার মাথায় নারীরূপে বোরকা পরা মামুন (৪০) নামে এক পুরুষ ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভোরে ছিনতাইয়ের প্রস্তুতিকালে শহরের বনবেলঘড়িয়া পশ্চিম বাইপাস এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় তার বোরকার ভেতর থেকে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি ধারালো চাকু ও রডের পাইপ উদ্ধার করা হয়। তবে ছিনতাইয়ের সাহায্যকারী রনি হোসেন (৩৯) নামের এক যুবক পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
গ্রেফতার মামুন (৪০) বনবেলঘরিয়া বাইপাস এলাকার মৃত বাহার উদ্দিনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে নাটোর সদর থানায় ছিনতাই ও চুরির চারটি মামলা রয়েছে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার নাটোর সদর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক সাখাওয়াত হোসেন বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
জানা যায়, বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিনিয়র সাংবাদিক মঞ্জরুল হাসানের ভাবি নাদিরা মোশাররফ সোনালী ব্যাংক নাটোর শাখা থেকে ৫০ হাজার টাকা তুলে বাসায় ফিরছিলেন। পথে পৌর ভবনের সামনে বোরকা পরা এক ছিনতাইকারী তার টাকাটি ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যান। এ ঘটনার পর অভিযানে নামে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশের একটি টহল টিম নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের মহিলা কলেজ গেট এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিল। এ সময় কলেজের সামনে নির্জন রাস্তায় বোরকা পরিহিত এক নারীকে একজন মোটরসাইকেল আরোহীর সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তারা এগিয়ে যান। তারা কোথায় যাবেন জানতে চাইলে পুলিশ দেখে মোটরসাইকেলচালক পালিয়ে যান।
তখন বোরকায় মুখ ঢাকা ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার কণ্ঠস্বর শুনে পুলিশের সন্দেহ হয়। এ সময় বোরকার মুখ খুলতে বললে তিনি তর্ক শুরু করেন। হঠাৎ পায়ের জুতা দেখে পুলিশ বুঝতে পারে তিনি নারী নন পুরুষ। তখন পুলিশ বোরকার মুখ খুলে ফেলে। দেখেন বোরকা পড়ে আছেন একজন পুরুষ।
এ সময় তার শরীর তল্লাশি করে একটি ধারালো চাকু ও রডের পাইপ উদ্ধার করা হয়। তাকে আটক করে থানায় এনে জানা যায় তার নাম মামুন ও তার সঙ্গে থাকা ছিনতাইয়ে সহায়তাকারীর নাম রনি।
সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, মামুনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নারীরূপী মামুনের ডাকে যারাই সাড়া দিতেন তারাই বিপদে পড়েছেন। অভিনব এ ছিনতাইকাজে জড়িত পুরো চক্রকে ধরতে অভিযানে নেমেছে পুলিশ।