সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে স্কুল পড়ুয়া ১৩ বছরের এক ছাত্রীকে হাওরের মাছে কাছারিঘর থেকে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় এক প্রভাবশালী ইউপি সদস্যের ছোট ভাই জোরপূর্বক পার্শ্ববর্তী হাওরের কাছে বাগানে তুলে নিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় ওই স্কুলছাত্রী এখন ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযুক্ত ধর্ষক নাম রেজাউল মিয়া(২৬)। সে উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের মাড়ালা গ্রামের প্রভাবশালী স্থানীয় ইউপি সদস্য মিয়া হোসেনের চাচাতো ছোট ভাই ও মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে।
ঘটনায় স্কুলছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে গতকাল (৩০ মে মঙ্গলবার) রাতে অভিযুক্ত ধর্ষক রেজাউল মিয়াকে আসামি করে তাহিরপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মাড়ালা গ্রামের পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ুয়া স্কুলছাত্রী। গত এক সপ্তাহ পূর্বে ওই স্কুল ছাত্রী শারীরিক ভাবে অসুস্থ হলে ওই ছাত্রীর পিতা চিকিৎসার জন্য মেয়েকে সিলেট নিয়ে ডাক্তার দেখান। পরে ডাক্তার ওই ছাত্রীর মেডিকেল টেষ্ট করে তার মেয়ে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা জানান। পরে মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে ফিরে মেয়েকে অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে সে অভিযুক্ত ধর্ষক রেজাউল মিয়ার নাম বলে।
অভিযোগে আরও জানা যায়, গত ১০ জানুয়ারি বিকেলে তাদের বসত বাড়ির দক্ষিণ আহাম্মক খালি ফিসারিতে মাছ দেখতে যায় ওই স্কুলছাত্রী। মাছ দেখে বাড়িতে ফেরার পথে একই গ্রামের রেজাউল মিয়া ওই স্কুলছাত্রীকে জোর পূর্বক তুলে নিয়ে স্থানীয় একটি করছ গাছের বাগানের ভিতর নিয়ে জোর পূর্বকভাবে ধর্ষণ করে। এ সময় স্কুলছাত্রী ধর্ষণের ঘটনা তার পরিবারের লোকজনকে বলতে চাইলে কথা বললে এ সময় ধর্ষক রেজাউল ঘটনাটি কাউকে জানালে স্কুলছাত্রীকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। রেজাউল এলাকার প্রভাবশালী হাওয়ায় প্রাণ ভয়ে কাউকে জানায়নি। পরে এক সপ্তাহ পূর্বে অসুস্থ হলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার পর তার অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি বেরিয়ে আসে।
স্কুলছাত্রীটির পিতা জানান, ঘটনা জানার পর রেজাউলের ভাই ইউপি মেম্বার মিয়া সোসেনকে বিষয়টি অবগত করলে রেজাউল মিয়া ও তার ভাই ইউপি সদস্য মিয়া হোসেন আমাকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদর্শন করেন। মিয়া হোসেন এলাকার একজন প্রভাবশালী লোক। আমরা গরীব মানুষ তাই আমি কোন উপায় না পেয়ে এর বিচারের জন্য আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আমার মেয়ের সাথে যে এরকম ঘটনা ঘটিয়েছে ওই রেজাউলে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করছি।
এ বিষয়ে রেজাউলের বড় ভাই দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড সদস্য মিয়া হোসেনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয় জানার পর আমরা রেজাউলকে চাপ দিলে সে অস্বীকার করে। কিন্তু মেয়ে বলছে রেজাউলের কথা। ভাই রেজাউল আমার চাচাতো ভাই লাগে। মেয়েও আমার নাতি লাগে। এখন আর কি করতে পারি। এটা আইনের বিষয় তাই মেয়ের বাবা থানায় মামলা করছে শুনেছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রেজাউলের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তাহিরপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে ওই মেয়েটির বাবা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্ত পূর্বক এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।