লন্ডন অফিস: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে প্রবাসীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে লন্ডনে ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পূর্ব লন্ডনের একটি স্থানীয় হলে যুক্তরাজ্য বিএনপি’র আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
যুক্তরাজ্য বিএনপি’র সভাপতি ও চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এম এ মালিকের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মাহিদুর রহমান এবং প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও যুক্তরাজ্য বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদ।
যুক্তরাজ্য বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন -সাধারণ সম্পাদক পারভেজ মল্লিকের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাপ্তাহিক সুরমা পত্রিকার সম্পাদক সামসুল আলম লিটন, মেজর (অবঃ ) সিদ্দিক , কর্নেল (অবঃ ) রুহুল আমিন। আলোচনা সভায় অতিথিবৃন্দ ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বরের পুরো প্রেক্ষাপট এবং শহীদ জিয়ার সাহসী ও দায়িত্বশীল ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।
আলোচনা সভায় এম এ মালিক তার বক্তব্যে বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন । ১৯৭৫ সালে সিভিল ও মিলিটারি উভয় সেক্টরে যখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছিল তখনো ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে শহীদ জিয়া নেতৃত্ব দিয়েছিলেন । বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন ও ১৯ দফা কর্মসূচির মাধ্যমে দেশকে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশ ও জাতির জন্য আরেকটি ক্রান্তিকাল চলছে । দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে বর্তমান সংকট থেকে দেশ ও জাতিকে উদ্ধার করতে নতুন বিপ্লবের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান । তার নেতৃত্বে জনগণ বিজয় ছিনিয়ে আনবেই। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের মতো প্রবাসীদের এই গণআন্দোলনে সর্বাত্মক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহবান জানান।
কয়ছর এম আহমেদ তার বক্তব্যে বলেন, ১৯৭১ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত দেশে যতবার সংকট এসেছে ততবার জিয়া পরিবার এগিয়ে এসেছে। ১৯৭১ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে দখলদার মুক্ত হয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে । ১৯৭৫ সালে কিছু কুচক্রী মহল প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে নিয়ে চক্রান্তে মেতে উঠে। বন্দি করা হয় তাকে, কিন্তু কোন চক্রান্তই সফল হয়নি । সিপাহী ও জনতার সম্মিলিত বিপ্লবের ফলশ্রুতিতে জিয়াউর রহমানকে বন্দীদশা মুক্ত হোন এবং পরবর্তীতে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে দেশের নেতৃত্ব দেন। তিনি বলেন ১৯৯০ সালে দেশের সংকটকালে স্বৈরাচার এরশাদের পতনে ঘটাতে এগিয়ে আসেন বিএনপির চেয়ারপারসন, মা বেগম খালেদা জিয়া। বর্তমানে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও লুটেরাদের কবল থেকে উদ্ধার ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বীরদর্পে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান।
জাতীয় নির্বাহী কমিটির এই সদস্য বলেন, বিএনপির চলমান এক দফা আন্দোলনে ফ্যাসিবাদী সরকার হত্যা, জেল জুলুম চালাচ্ছে। বিএনপির লক্ষ লক্ষ্য নেতাকর্মীকে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করছে এবং বাড়িছাড়া করছে। কিন্তু তারেক রহমানের নেতৃত্বে আন্দোলন সফল করতে বিএনপিসহ সকল বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা মামলা জেল জুলুমকে ভয়কে জয় করে চলছে। তিনি চলমান গণ-আন্দোলন সফল করতে সারা বিশ্বের প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেশের গণতন্ত্রকামী আন্দোলকারীদের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানান।
বক্তারা বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করেন এবং মিথ্যা মামলা থেকে তাঁর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
আলোচনা অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন যুক্তরাজ্য বিএনপির প্রধান উপদেষ্টা শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সহ-সভাপতি আলহাজ তৈমুজ আলী, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল হামিদ চৌধুরী, সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নসরুল্লাহ খান জোনায়েদ, যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ খান, খসরুজ্জামান খসরু, মিসবাউজ্জামান সোহেল, ড. মুজিবুর রহমান (দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত), আজমল হোসেন চৌধুরী জাবেদ, হাসনাত কবির খান রিপন, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মামুন, নাসিম আহমদ চৌধুরী, সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ইউরোপের কো-অর্ডিনেটর কামাল উদ্দিন, সহ-সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আহমদ, ইস্ট লন্ডন বিএনপির সাবেক সভাপতি ফখরুল ইসলাম বাদল, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাংস্কৃতিক সম্পাদক হাবিবুর রহমান, কেন্ট বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নাসির আহমদ শাহীন, কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্য ও যুক্তরাজ্য যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন, যুক্তরাজ্য স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন, কেন্দ্রীয় যুবদল সদস্য বাবর চৌধুরী, যুক্তরাজ্য আইনজীবী ফোরামের সভাপতি ব্যারিস্টার আবুল মনসুর শাহজাহান, আইনজীবী ফোরামের সাবেক সভাপিত ব্যারিস্টার তারেক বিন আজিজসহ প্রমূখ।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ সভাপতি কাজী ইকবাল হোসেন দেলাওয়ার, আবেদ রাজা, আব্দুল মুকিত, সাবেক সহ সভাপতি আখতার আহমদ, সহ সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাসিত বাদশাহ, খলিলুর রহমান, বাবুল আহমদ চৌধুরী, সহ দপ্তর সম্পাদক সেলিম আহমদ, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন সেলিম, প্রচার সম্পাদক ডালিয়া লাকুড়িয়া, সহ প্রচার সম্পাদক মঈনুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এ জে লিমন, মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ চৌধুরীসহ যুক্তরাজ্য বিএনপি, জোনাল কমিটি, অঙ্গ ও সহযোগী সগঠনের সর্বস্থরের নেতৃবৃন্দ।
বাংলাপেইজ/এএসএম