হাবিব রহমান.সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পে কৃষক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শীতকালীন পেঁয়াজ তাহিরপুরী চাষ করা হয়েছে। আর এ পেঁয়াজ চাষে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন এলাকার কৃষক। হাওরে অনাবাদী পতিত ফসলি জমি, বাড়ির পাশের পতিত জমি, পুকুরের পাড় তাঁরা চাষ করেছেন পেঁয়াজ। আবহাওয়া ও মাটি ভালো তাই শুরুতেই এ এলাকায় পেঁয়াজের ফলন খুবই ভালো হওয়ায় আর্থিকভাবে লাভবানের স্বপ্ন দেখছেন কৃষক। তাই এবারের পেঁয়াজের ফলন দেখে আগামী মৌসুমে পেঁয়াজ চাষ আরো অধিকহারে বাড়বে বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ।
উপজেলার ভীমখালী, ফেঁনারবাক, জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের একাধিক পেঁয়াজ চাষির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পেঁয়াজের নতুনজাত তাহিরপুরী। এই পেঁয়াজ চাষে কৃষকের খরচ খুবই কম। আর শীতকালীন পেঁয়াজের ফলনও বেশ ভাল। এতে আগামী মৌসুমেও বীজ থেকে পেঁয়াজের চাষ আরও বাড়ার সম্ভাবনা দেখছেন কৃষিবিভাগ। পেঁয়াজ রোপণের ৩ মাসের মধ্যে তোলে তার সাথী ফসল হিসেবে অন্যান্য ফসলও আবাদ করতে পারেন চাষিরা।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলায় ২৮হেক্টর জমিতে প্রায় অর্ধশত কৃষক পেঁয়াজের আবাদ করেছেন। বিগত বছর গুলোতে এ এলাকাতে কোন পেঁয়াজ চাষ হতনা। এ বছরই প্রথম বানিজ্যকভাবে প্রদর্শনীর মাধ্যমে এ পেঁয়াজ চাষ হচ্ছে। এতে বিনামূল্যে সার, বীজ, বালাইনাশকসহ যাবতীয় উপকরণ এমনকি জমি প্রস্তুত, সেচ ও শ্রমিকসহ পরিচর্যার জন্য নগদ অর্থও কৃষককে প্রদান করা হয়েছে। জামালগঞ্জ কৃষি অফিস পেঁয়াজ চাষিদের সঙ্গে সর্বক্ষণিক যোগাযোগ করে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে।
ধানুয়াাখালী গ্রামের কৃষক আব্দুল লতিফ বলেন, এবারই প্রথম ৫০ শতাংশ জমিতে নতুন জাতের পেঁয়াজ তাহিরপুরী চাষ করি। বীজ সারসহ অন্যান্য উপকরণ দিয়েছে কৃষি অফিস। অনেক ভালো ফলন হয়েছে আশা করি ২ মাসের মধ্যে ১৫০ মণ পেঁয়াজ উৎপাদন হবে।
ভীমখালী ইউনিয়নের জাল্লাবাজ গ্রামের কৃষক আমির হোসেন বলেন, বাণিজ্যিকভাবে এবার ৩০ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজের চাষ শুরু করলাম। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২মাসের মধ্যে ৮০-৯০ মন পেঁয়াজ উৎপাদনের আশা করছি। এখানে নিজের জমি ও পরিশ্রম বাদ দিলে সবকিছুই বিনামূল্যে হয়ে যাবে। সামনে আরও বেশী জমিতে এই পদ্ধতিতে চাষ করার ইচ্ছা আছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.আলা উদ্দিন প্রতিবেদককে জানান, এ উপজেলা তেমন পেঁয়াজ চাষ হতনা বললেই চলে। এবার কৃষককে পতিত জমিতে আধুনিক প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এবার প্রথম বাণিজ্যিকভাবে প্রদর্শণী হিসেবে এ এলাকায় পেঁয়াজ চাষ হচ্ছে। এবারের পেঁয়াজের ফলন ভালো হওয়ায় উপজেলার অন্যান্য কৃষকরাও আগামী শীত মৌসুমে পেঁয়াজের চাষে কৃষকদের আগ্রহ প্রকাশ করছে। যেহেতু এবার প্রথমবারের মত চাষ হচ্ছে সেহেতেু কৃষি বিভাগ কৃষকদের সর্বক্ষণ পরামর্শ সহযোগী এবং খোঁজ খবর রাখছে।