কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক আব্দুল মালেকের পাঁকা ঘর নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এতে ওই পরিবারটি মানবেতর জীবনযাপন করছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের অনন্তপুর বড়াইরতল এলাকার আন্তর্জাতিক মেইন সীমানা পিলার নম্বর ৯৪৬/২ এস পিলারের কাছে।
জানা গেছে, ওই এলাকার মৃত জমির উদ্দিনের ছেলে আব্দুল মালেক (৬০) পৈতিৃক সূত্রে পাওয়া ৫ শতক জমির ওপর স্ত্রীসহ ছেলে দুলাল ও মিলনকে নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে খড়ের ঘর তুলে বসবাস করে আসছিলেন তিনি।
পরিবারে অভাব অনটনের কারণে কয়েক বছর আগে ঢাকায় পারি জামায় আব্দুল মালেকের পরিবার। সেখানে তিনি একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে চাকরি করছেন। অনেক কষ্টে তার জমানো টাকা দিয়ে ১০ থেকে ১৫ দিন আগে ওই ভিটায় একটি টিনশেডের পাকা ঘরের কাজ শুরু করেন। ইতিমধ্যে ৩টি কক্ষের ইটের গাঁথুনির কাজ চলমান রয়েছে।
গত ২১ জানুয়ারি বিকেলে ভারতীয় ১৩৮ ব্যাটালিয়নের অধীনে ঝিকরী ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবির) সদস্যদের মধ্যে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে পাকা ঘর নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেন দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীরা। নোম্যান্স ল্যান্ডে কোনো ধরনের পাকা স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না মর্মে ওই পরিবারটিকে জানান।
আব্দুল মালেকের ছেলে গার্মেন্টস কর্মী দুলাল মিয়া বলেন, আমাদের বাড়ি করার মতো আর কোনো জমি নেই। কিংবা অন্যত্র জমি কিনে বাড়ি করার মতো আমাদের সামর্থ্যও নেই। অনেক কষ্টে জমানো টাকা দিয়ে একটি টিনশেড পাকা ঘর নির্মাণ করতে চেয়ে ছিলাম। কিন্ত বিএসএফের বাধায় ঘর নির্মাণ করতে পারছি না। এই তীব্র শীতে ঝুপড়ি ঘরে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।
উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মানিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করায় বিএসএফ ঘর নির্মাণ করতে দিচ্ছে না। বিএসএফ বাধা দেওয়ায় আপাতত ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।
লালমনিরহাট ১৫ ব্যাটালিয়নের অধীন অনন্তপুর ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার সফিকুল ইসলাম জানান, বিএসএফের বাধা এবং সীমান্ত থেকে আনুমানিক ৭০ গজের ভেতর নির্মাণ কাজ হওয়ায় এটি বন্ধ রয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠকও করেছি।
বাংলাপেইজ/এএসএম