লিওনেল মেসির বার্সেলোনা ত্যাগ অধ্যায় বাদে গোটা ২০২১ সালটাই ছিল সুখে মোড়ানো। স্বপ্নের মতো একটি বছর কাটিয়েছেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। ২৮ বছরের খরা ঘুচিয়ে জিতেছেন জাতীয় দলের হয়ে শিরোপা। ক্লাব ফুটবলেও ছিলেন উজ্জ্বল। সাফল্যের বছরে মেসি জিতেছেন রেকর্ড সপ্তমবারের মতো ব্যালন ডি’অর পুরস্কার। অনুমিতভাবেই ফিফার বর্ষসেরার দৌড়েও এগিয়ে তিনি। মেসির সঙ্গে বর্ষসেরার সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন তার নিকট প্রতিদ্বন্দ্বী রবার্ট লেভানদোভস্কি। রয়েছেন লিভারপুলের সেরা তারকা মোহাম্মদ সালাহ।
ব্যালন ডি’অরের দৌড়ে মেসির সঙ্গে সমানতালে লড়াই করেছেন লেভানদোভস্কি।
অল্পের জন্য প্রথম বর্ষসেরা হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে বায়ার্ন মিউনিখের পোলিশ স্ট্রাইকারের। বছরের সেরা হওয়ার সব খেতাবেই দুজন দুজনার তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বী বনে গিয়েছেন। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে আলো ছড়িয়েছেন মোহাম্মদ সালাহ।
২০২১ সালের ‘দ্য বেস্ট ফিফা মেনস প্লেয়ার’ নির্বাচনে গত ২২শে নভেম্বর ১১ জনের তালিকা প্রকাশ করেছিল ফিফা। ২০২০ সালের ৮ই অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের ৭ই আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে পারফরম্যান্সের বিচারে ফিফার একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল তালিকাটি তৈরি করেছিল। চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, নেইমার, কিলিয়ান এমবাপ্পে, আর্লিং হালান্দ, জর্জিনহো, এনগোলে কন্তে, করিম বেনজেমা ও কেভিন ডি ব্রুইনা।
গত মৌসুমের দারুণ পারফরম্যান্সের জন্য গত ২৯ নভেম্বর লেভানদোভস্কি ও জর্জিনহোদের হারিয়ে রেকর্ড সপ্তম ব্যালন ডি’অর জেতেন মেসি। তার সামনে এবার সুযোগ ফিফার পুরস্কারটিও সাতবার উঁচিয়ে ধরার।
বার্সেলোনার হয়ে বিদায়ী মৌসুমটা তেমন ভালো না কাটলেও ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে তিনি উজ্জ্বল ছিলেন বরাবরের মতোই। লা লিগায় সর্বোচ্চ ৩০ গোল করে রেকর্ড অষ্টমবারের মতো জেতেন পিচিচি ট্রফি। আর কোপা দেল রের ফাইনালে আথলেটিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে ৪-০ ব্যবধানে জয়ে জোড়া গোল করেন তিনি।
জাতীয় দলের জার্সিতে ক্যারিয়ার সেরা সময় পার করেছেন মেসি। ব্রাজিলকে হারিয়ে জিতেছেন প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা, উঁচিয়ে ধরেছেন কোপা আমেরিকার ট্রফি। আন্তর্জাতিক ফুটবলে দেশের ২৮ বছরের শিরোপা খরা কাটানোর মিশনে চার গোল করে ও পাঁচটি করিয়ে নেতৃত্ব দেন সামনে থেকে। ওই আসরে নেইমারের সঙ্গে যৌথভাবে সেরা খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হন ৩৪ বছর বয়সী তারকা।
গতবারের ফিফার দ্য বেস্ট লেভানদোভস্কির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া যায় না। জাতীয় দলের হয়ে তার তেমন কোনো অর্জন না থাকলেও ক্লাবে দুর্দান্ত সময় কাটিয়েছেন তিনি। বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে গত মৌসুমে বুন্দেসলিগা জয়ের পথে এক আসরে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড গড়েন এই স্ট্রাইকার।
সালাহর সেরা তিনে জায়গা পাওয়ার পাথেয় ছিল ক্লাব ফুটবল। মিশরের জার্সিতে অর্জন না থাকলেও ২০২০-২১ প্রিমিয়ার লীগে তৃতীয় হওয়া লিভারপুলের সেরা গোলদাতা ছিলেন তিনি; ২২ গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়ে করান পাঁচটি। লীগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন তিনি।
নারী ফুটবলারের সংক্ষিপ্ত তিনে আছেন- জেনিফার হারমোসো (স্পেন/বার্সেলোনা), সাম কের (অস্ট্রেলিয়া/ চেলসি এফসি) ও অ্যালেক্সিয়া পুতেলাস (স্পেন/বার্সেলোনা)। ১৭ জানুয়ারি জুরিখে ‘দ্য বেস্ট ফিফা ফুটবল অ্যাওয়ার্ডস’ অনুষ্ঠানে জানানো হবে বিজয়ীর নাম।