পৌষ নিয়ে আসে পিঠার আগমনী বার্তা। মাঘ ও ফাল্গুন মাস পর্যন্ত চলতে থাকে নানান রকম পিঠা খাওয়ার উৎসব। নতুন ধানের চালে থাকে সুঘ্রাণ আর আর্দ্রতা। ধান যত পুরোনো হয়, ততই তার আর্দ্রতা হারায়। পুরোনো চালের গুঁড়ার তৈরি পিঠা সুস্বাদু হয় না। তবে, ভেজা চালের গুঁড়া ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করে পিঠার স্বাদ অক্ষুণ্ন রাখা যায়। পিঠা তৈরির কৌশল জানা থাকলে যেকোনো অঞ্চলের পিঠা তৈরি করা যায়। চালের গুঁড়া ছাড়া পিঠা তৈরির জন্য আখের গুড়, পাটালি গুড়, নারকেল, চিনি, সুজি, ময়দা, ডিম দেওয়া হয়। ঝাল পিঠা তৈরিতে আদা, পেঁয়াজ, মসলা, শুঁটকি, মাংস ব্যবহার হয়।
ভাপা পিঠা : ভাপা পিঠা সুস্বাদু করতে চাইলে পানির পরিবর্তে সামান্য তরল দুধে মেখে রাখবেন কয়েক ঘণ্টা। আতপ চালের গুঁড়ার সঙ্গে পোলাও চালের গুঁড়া মিশিয়ে ঘ্রাণ বাড়াতে পারেন। এরপর চালুনি দিয়ে চেলে নেবেন। ভেজা চালের গুঁড়া চেলে দিলে দলা দলা হবে না। ইচ্ছে হলে গুঁড়ের পরিবর্তে ভেতরে সবজি, শুঁটকি, মাংস, ইলিশ মাছ দিয়ে ঝাল ভাপা পিঠা তৈরি করা যায়।
পুলি পিঠা: পুলি পিঠা তেলে ভেজে অথবা ভাপে তৈরি করা হয়। ডো সেদ্ধ করে ভালোভাবে মথে রুটি তৈরি করলে পিঠা অনেক সুন্দর হবে। তা ফেটে যাবে না। মিষ্টি বানাতে চাইলে গুড়, নারকেল, তিল দিতে পারেন। আর ঝাল করতে চাইলে ভেতরে মাংসের কিমা, সবজির পুর দিয়েও এই পিঠা তৈরি করা যায়।
চিতই পিঠা : চিতই পিঠা বানাতে মাটির প্যান দরকার হয়। তবে ছোট লোহার কড়াইতেও এ পিঠা তৈরি করতে পারেন। যদি চালের গুঁড়া শুকনা হয়, সে ক্ষেত্রে কুসুম গরম পানি দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করবেন। কড়াই গরম হওয়ার পর মিশ্রণ দিয়ে ঢেকে রাখবেন কয়েক মিনিট। ইচ্ছে হলে এর ওপর ডিম কিংবা ইলিশ মাছ দিতে পারেন। বিভিন্ন রকম ভর্তা কিংবা হাঁসের মাংসের সঙ্গে খেতে দারুণ লাগে।
ম্যারা পিঠা : ম্যারা পিঠা, ছাইয়্যা পিঠা, মুঠা পিঠা, গোটা পিঠা, দৌল্লা পিঠা একেক অঞ্চলে এ পিঠার নাম একেক রকম। কিন্তু সব অঞ্চলেই এই পিঠা তৈরির পদ্ধতি ও স্বাদ একই। এ পিঠা তৈরিতে চালের গুঁড়া, লবণ পানিতে সেদ্ধ করে কিছু সময় ঢেকে রাখতে হয়। এতে ডোয়ের আর্দ্রতা ভালো হবে। ডো ভালোভাবে মথে পিঠার আকার তৈরি করে নিতে হবে। ভাপে সেদ্ধ করে বাতাসে ছড়িয়ে ঠান্ডা করে নেবেন। অনেক জায়গায় এ পিঠার ভেতর গুঁড়ের পুর দিয়ে তৈরি করা হয়।