মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। টিপুপন্থী নেতাকর্মীদের অভিযোগ, মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল দীর্ঘদিনের। বর্তমান কমিটি ও টিপুর লোকজনের মধ্যে এই কোন্দল চলে আসছে। রাজনৈতিকভাবে শক্ত অবস্থানের জন্য টিপুকে বিপক্ষের লোকজন হত্যা করেছে। টিপুপন্থীরা শঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন, তারা টিপুপন্থী নেতাকর্মী হওয়ায় তাদেরও এখন খুন করা হতে পারে। তারা এখন প্রাণের ভয়ে এলাকায় যেতে পারছেন না।
শুক্রবার (২৫ মার্চ) ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) মর্গের সামনে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের টিপুপন্থী নেতাকর্মীরা গণমাধ্যমের কাছে এসব অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে মতিঝিল থানা শ্রমিক লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির এক সদস্য বলেন, আমাদের গ্রুপের নেতা ছিলেন টিপু ভাই। মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির সঙ্গে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব চলছিল। এই দ্বন্দ্বের জের ধরে টিপু ভাইকে হত্যা করা হয়েছে বলে আমাদের ধারণা।
কারা হত্যা করেছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের নাম আমি বলতে পারব না। টিপু ভাইকে মেরে ফেলার পর আমরা এলাকায় যেতে পারব কি না সেটা নিয়েই ভয়ে আছি। আর এখন যদি কারো নাম বলি তাহলে জানে মেরে ফেলবে আমাকে। তবে এলাকায় যেকেউ গেলেই বুঝতে পারবে কারা টিপু ভাইকে হত্যা করেছে।
এদিকে ঢামেক হাসপাতালে সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের মর্গে সকাল থেকেই টিপুপন্থী নেতাকর্মীরা ভিড় করছেন। সবার মুখেই আতঙ্কের ছাপ।
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, টিপুর মরদেহ বেলা ১১টার দিকে মর্গে আনা হলেও ময়নাতদন্ত শুরু হয়নি। এছাড়া এ ঘটনায় নিহত প্রীতির মরদেহ এখনো মর্গে আনা হয়নি।
শাহজানপুর থানা সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে জাহিদুল মাইক্রোবাসে করে শাহজাহানপুর আমতলা কাঁচাবাজার হয়ে বাসায় ফিরছিলেন। শাহজাহানপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনে পৌঁছালে হেলমেট পরা দুর্বৃত্তরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে জাহিদুল ও তার গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় জাহিদুলের গাড়ির পাশ দিয়ে রিকশায় যাচ্ছিলেন বদরুন্নেসা কলেজের ছাত্রী প্রীতি। তিনিও গুলিবিদ্ধ হন। তাদের রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাহিদুল ও প্রীতিকে মৃত ঘোষণা করেন। গুলিবিদ্ধ গাড়িচালক মুন্না বর্তমানে ঢামেকে চিকিৎসাধীন।
মতিঝিল বিভাগের সবুজবাগ জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মনতোষ বিশ্বাস বলেন, নিহত জাহিদুল সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ডলির স্বামী। এছাড়া তিনি মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। রাতে বাসায় ফেরার পথে তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় একদল দুর্বৃত্ত। এতে তার গাড়িচালক ও তার গাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়া এক নারী গুলিবিদ্ধ হন। পরে তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক জাহিদুল ও প্রীতিকে মৃত ঘোষণা করেন।