Monday, April 29, 2024
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
Homeঅর্থনীতিপি কে হালদারের অবৈধ সম্পদের খোঁজে ভারতে অভিযান

পি কে হালদারের অবৈধ সম্পদের খোঁজে ভারতে অভিযান

প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের খোঁজে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশে অভিযান চালানো হয়েছে। শুক্রবার দিনভর কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনার অন্তত ১০টি স্থানে তল্লাশি চালিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।

শুক্রবার ভোরে উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার পোলেরহাটে দু’টি বাড়িসহ বিভিন্ন জায়গায় পি কে হালদারের ব্যক্তিগত আইনজীবী সুকুমার মৃধার অবৈধ সম্পত্তির খোঁজে অভিযান শুরু করে ভারতের এই সংস্থা। কর্মকর্তারা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে এই তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় তাদের সঙ্গে প্রচুর নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন।

অসমর্থিত সূত্রের বরাত দিয়ে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডি ডব্লিউ বলছে, মৃধার একটি বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধার করেছে ইডি। তবে এই অর্থ কোথায় থেকে এসেছে সেই বিষয়ে তারা এখনও নিশ্চিত হতে পারেননি। ইডি সূত্র বলছে, তদন্ত শেষে জব্দকৃত অর্থের উৎস সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হতে পারবেন। এর সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থ পাচার মামলার আসামি পি কে হালদার জড়িত কি-না তাও তদন্ত রিপোর্ট এলে জানা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এদিকে, সুকুমার মৃধা বাংলাদেশে বসবাস করলেও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় তার অনেক মাছের ভেড়ি আছে বলে অভিযোগ রয়েছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে ইডি। সুকুমার মৃধার অবৈধ সম্পদ বা অর্থ পাচারের বিষয়ে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ কোনো তথ্য দিয়েছিল কি-না সেটি ইডি সূত্র নিশ্চিত করেনি।

বহুল আলোচিত অর্থ পাচার মামলার আসামি পি কে হালদার বাংলাদেশ থেকে কানাডায় পালিয়ে গেছেন। তাকে প্রত্যর্পণের জন্য কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার মাঝে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জানতে পারে পলাতক পি কে হালদারের বিপুল সম্পদ রয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অশেকনগরে আছে পি কে হালদারের বাড়ি। এ ছাড়া ভারতের আরও কয়েকটি রাজ্যে তার বাড়ি আছে।

এর পরেই দুদক পি কে হালদারের বিষয়ে তথ্য পাঠায় ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এর কাছে। ভারতীয় একটি গণমাধ্যম বলছে, সেই তথ্য নিয়ে শুক্রবার অশোকনগরে অভিযান পরিচালনা করেছেন ইডি কর্মকর্তারা।

এই অভিযানের বিষয়ে জানতে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ডি ডব্লিউকে তিনি বলেন, ‘আমিও সংবাদমাধ্যম থেকে এই বিষয়ে খবর পেয়েছি। বিস্তারিত কোনো তথ্য এখনও আমার জানা নেই।’

সুকুমার মৃধা বা পি কে হালদারের পশ্চিমবঙ্গে অবৈধ সম্পত্তির বিষয়ে দুদক বা বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীর বাহিনীর পক্ষ থেকে ভারতের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছিল কি-না তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। তবে ‘মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসেসমেন্টের’ মাধ্যমে সহায়তা চাওয়ার সুযোগ আছে বলে তিনি জানান।

পি কে হালদার বা সুকুমার মৃধা বাংলাদেশ থেকে ভারতে অর্থ পাচার করলে সেটি ফেরত আনা সম্ভব হবে বলেও মনে করেন তিনি। দুদকের এই আইনজীবী বলেন, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ যদি নিশ্চিত করে এই অর্থ বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়েছে, তাহলে আদালতের মাধ্যমে আমরা সেটা জব্দ করতে পারবো।

দুদক বলছে, হাজার কোটির বেশি টাকা আত্মসাৎ করে দেশত্যাগী প্রশান্ত কুমার হালদারের বিভিন্ন কাজে সাহায্য করত বাংলাদেশ ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা। পি কে হালদারের ক্ষমতার উৎস ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর ও নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম। বিভিন্ন সময়ে পি কে হালদার আর্থিক সুবিধা ও মূল্যবান উপহার দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের ওই দুই কর্মকর্তাকে বশে রেখে দুর্নীতির মাধ্যমে অবাধে অর্থ লোপাট করেছে।

পলাতক পি কে হালদারের আরেক সহযোগী সুকুমার মৃধাও বাংলাদেশ ত্যাগ করে। তার একটি বাড়ি আছে পশ্চিমবঙ্গের অশোকনগরে। পি কে হালদার ও সুকুমার মৃধার অবৈধ লেনদেন ছড়িয়ে আছে ঢাকা কলকাতা, হাওড়া, চেন্নাই, মুম্বাইয়ে। বাংলাদেশ থেকে অবৈধ টাকা ভারতে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জায়গায় পি কে হালদার সম্পত্তি কিনেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

বরিশালের পিরোজপুরে বাসিন্দা পি কে হালদার। তার বাবা প্রয়াত প্রণবেন্দু হালদার পেশায় ছিলেন গ্রাম্য বাজারের দর্জি। মা শিক্ষিকা। ছেলের এমন দুর্নীতির পর তিনি ভারতের অশোকনগরে আরেক ছেলে প্রাণেশ হালদারের বাড়িতে চলে গেছেন।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments