সজীব আহম্মেদে রিমনঃ
১২০৬ সালে ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বিন বখতিয়ার খলজি’র নদীয়া বিজয়ের মাধ্যমে বাংলায় মুসলিম শাসনের পথ উন্মেচিত হয়। পরবর্তীতে এটি রূপ নেয় সাম্রজ্যে, মুসলিম শাসকরা শাসন করেন দীর্ঘ সময় ধরে, অর্থাৎ ১২০৬ থেকে ১৫০৬ সাল পর্যন্ত। এই সময়কালকে বলা হয় সুলতানী আমল।
এসময়ে সুলতান ও সুলতানের অধীনস্ত কর্মকর্তারা বাংলার বিভিন্ন স্থানে নান্দনিক স্থাপনা নির্মাণ করেন। যার অধিকাংশ ছিল মসজিদ। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলায় প্রাপ্ত সুলতানী আমলের দৃষ্টিনন্দন মসজিদ স্থাপনার মধ্যে অন্যতম কুসুম্বা মসজিদ।
অনেকে মসজিদটিকে পাঁচ টাকা নোটের মসজিদও বলে থাকে।কারণ স্থাপত্যশৈলী ও নান্দনীকতার গুরুত্বতের কথা বিচারে দেশের পাঁচ টাকার নোটে কুসুম্বা মসজিদের ছবি ছাপানো হয়েছে।
পাঁচ টাকার নোটে কুসুম্বা মসজিদ
সুলতানী আমলের মসজিদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে অন্যতম জেনানা গ্যালারি। কুসুম্বা মসজিদের উত্তর-পশ্চিম কর্ণারে জেনানা গ্যালারি রয়েছে। এমন জেনানা গ্যালারি রয়েছে দারাসবাড়ি এবং ছোট সোনা মসজিদে। জেনানা গ্যালারিতে সমকালীন সময়ে মহিলারা নামাজ আদায় করতে পারতেন।
জেনানা গ্যালারি প্রমাণ করে তৎকালীন সময়ে মসজিদে মহিলাদের প্রবেশাধিকার ছিল এবং সমাজে তাদের অবস্থান ছিলো ভালো। এধরণের সংযোজন পরবর্তীতে মোঘল আমলের মসজিদে আর পাওয়া যায় না।
উত্তর-পশ্চিম পার্শ্বে জেনানা গ্যালারি
স্থাপত্যিক অলংকরণের দিক থেকে বিচার করলে নিঃসন্দেহে এই মসজিদকে সূক্ষ্ম ও চাতুর্থপূর্ণ খোদাইকাজের জন্য অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিদর্শন বলা যায়। আর এই শ্রেষ্ঠ নিদর্শন স্বগৌরবের সহিত চারশত বছরেরও বেশি সময় ধরে টিকে রয়েছে।
মসজিদের অলংকরণ সমকালীন মানুষের নান্দনিকতা ও রুচিশীলতার পরিচয় দেয়। নান্দনিক এই মসজিদটি দেখতে ও নামাজ আদায় করতে প্রায় প্রতিদিনই বহু পর্যটক আসেন। বর্তমানে মসজিদটি বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধীনে সংরক্ষিত রয়েছে।
বাংলাপেইজ/এএসএম