Sunday, October 6, 2024
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
Homeআন্তর্জাতিকঅনাস্থা প্রস্তাব এবং সমাবেশ পাকিস্তানে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়িয়েছে

অনাস্থা প্রস্তাব এবং সমাবেশ পাকিস্তানে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়িয়েছে

ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এবং রাস্তায় সমাবেশ পাকিস্তানে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানসহ বিরোধী নেতারা বিভিন্ন ধর্মীয় রেফারেন্স এবং শব্দ ব্যবহার করছেন।

আপাত দৃশ্যমান যে, পাকিস্তানের রাজনীতিতে বর্তমানে ধর্মের তাস ভালোই খেলা হচ্ছে। প্রশ্ন হলো, এবারই কি প্রথম পাকিস্তানে এমন হচ্ছে? কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের গবেষণাপত্র ‘দ্য রোল অব রেলিজিয়ন ইন পাকিস্তান’স পলিটিক্যাল ডেভলপমেন্টে’- বি এম চ্যাংপা লিখেছেন যে দ্বিজাতি তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে পাকিস্তানের জন্ম হয়েছিল। তবে ১৯৪৭ সালের ১১ আগস্ট এই তত্ত্ব তার গুরুত্ব হারায়, যখন পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ প্রকাশ্যে বলেছিলেন, ধর্ম কোনো ব্যক্তির ব্যক্তিগত বিষয়।

পরে আহমদিয়াবিরোধী দাঙ্গা, রেজোলিউশনের উদ্দেশ্য, মৌলিক নীতি কমিটির প্রতিবেদন এবং ১৯৬২ সালের সংবিধান পাকিস্তানের রাজনীতিতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখে।৭৫ বছর ধরে ধর্মের ব্যবহার লাহোর ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সের সাথে যুক্ত ইতিহাসের অধ্যাপক আলী উসমান কাসমি বলছেন, এ দেশের ভিত্তিই যখন মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে এর আলাদা পরিচয়, তখন কোনো না কোনোভবে তা ধর্মের সাথে যুক্ত থাকবেই।

পাকিস্তান গঠনের পর অবশ্য বিতর্ক ছিল, কীসের ভিত্তিতে পাকিস্তান গঠিত হয়েছে, কীসের ভিত্তিতে পাকিস্তানের সংবিধান বা ফেডারেশন গঠন করা উচিত আর কোন অর্থে তার ব্যাখ্যা করা উচিত?

কাসমি বলেন, গত ৭০-৭৫ বছর ধরে ধর্মকে ব্যবহার করা হচ্ছে। মৌলিক নীতিগুলো দিয়েই এর শুরু। তারপর আইয়ুব খানের আমলে, একটি নতুন রূপ গ্রহণ করা হয়, যার মাধ্যমে একটি নতুন ইসলামের রাজনীতি চলে। এতে আইয়ুব খান নিজেকে কামাল আতাতুর্কের মতো করে উপস্থাপন করেন। তারা আধুনিক ইসলাম ও মোল্লাদের ইসলামের মধ্যে একটি বিরোধ শুরু করে নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করেন এবং রাষ্ট্র গঠনে ধর্মের ভূমিকাকে অন্তর্ভুক্ত করেন।

তুরুপের তাস ধর্ম
পাকিস্তানে অনাস্থা প্রস্তাবের মুখোমুখি ইমরান খান ও বিরোধী দলীয় নেতা ফজলুর রহমান ধর্মীয় বক্তব্য দিচ্ছেন। এটা কি আসন্ন নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে? তাও যখন ধর্মীয় দল তেহরিক-ই-লাব্বাইক গত নির্বাচনে ভালো ভোট পেয়েছে?

আলি কাসমি বলছেন, পাকিস্তানের রাজনীতি আবার সেই পথেই হাঁটছে, যেখানে কে সবচেয়ে বেশি ধর্মকে ব্যবহার করতে পারে, তা নিয়ে প্রতিযোগিতা হবে। আগামী নির্বাচনেও এই বিষয়টি সত্য প্রমাণিত হবে।

গবেষক ও লেখক ড. আয়েশা সিদ্দিক বলেছেন, ধর্ম একটি তুরুপের তাস, তা সে যেই হাতে আসুক না কেন। একে সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে কেউ কেউ এগিয়ে যায়।

এটাই পাকিস্তানের রাজনীতির প্রকৃতি, কারণ এই রাজনীতি ধর্ম ছাড়া আর কিছুই জনগণকে দিতে পারে না। মুসলিম লিগ (নওয়াজ), জামায়াত-ই-ইসলামি এবং তেহরিক-ই-ইনসাফও ধর্মকে ব্যবহার করে।

পাকিস্তানের রাজনৈতিক ইতিহাসের ওপর নজর রাখা সাংবাদিক ও বিশ্লেষকরা মনে করেন, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ধর্মীয় ইস্যুর ব্যবহার পুরনো ঐতিহ্যেরই ধারাবাহিকতা। এই প্রচেষ্টা কি অতীতের চেয়ে আলাদা হবে? এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়ার সময় এখনও আসেনি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments