ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চার গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ আর ১৩টি বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর ও ধ্বসযজ্ঞ চালানো হয়। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
৩১ মার্চ দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টাব্যাপী চলা এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের সহস্রাধিক মানুষ দেশীয় অস্ত্র ঢাল, সড়কি, বল্লম, টেঁটা ও ইট নিয়েেএক প্রকার ‘যুদ্ধে’ লিপ্ত হয়।মানিকদহ ইউপির সাবেক ইউপি সদস্য পুখুরিয়া গ্রামের করিম মাতুব্বর (৭৬) ও ব্রাহ্মনকান্দা গ্রামের ইয়াকুব আলী মিয়া (৬২) একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন। অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন পুখরিয়ার তুহিন খাঁ (৩৫) ও খাকান্দা গ্রামের কালাম মোল্লা (৭০)।
সংঘর্ষের সময় তুহিন খাঁ ও কালাম মোল্লার সমর্থকরা খন্দকার সেকেন ভূঁইয়া ও পুখুরিয়ার হারুণ মিয়ার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এ ছাড়া সংঘর্ষের সময় উভয় পক্ষের অন্তত ১৩টি বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। কিছু বাড়ির ভেতরে সব আসবাবপত্রও তছনছ করা হয়। এসময় নারী-শিশুদের চিৎকারে গোটা এলাকায় একটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি হয়।
পরে পুলিশ গিয়ে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।সংঘর্ষে আহতদের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ এ পর্যন্ত লুটপাট হওয়া চারটি গরু উদ্ধার করেছে।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে এর আগেও কয়েকদফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সবশেষ আজ আবারও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল। ঘটনার পর ওই এলাকায় পুলিশ ঘরে ঘরে তল্লাশি চালিয়ে দেশীয় নানা অস্ত্র উদ্ধার করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই পক্ষই ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, সদরপুর, চরভদ্রাসন) আসনের বর্তমান স্বতন্ত্র দলীয় সাংসদ মজিবুর রহমান নিক্সনের সমর্থক। গত ২১ মার্চ সাংসদ নিক্সন ভাঙ্গার কাউলিবেড়ায় এক জনসভা করেন। ওই সভায় যোগ দেন এই দুই পক্ষের লোকজন। সেদিনের (২১ মার্চ) ওই সভা থেকে ফেরার পথে তুহিন খাঁর দলের সমর্থক ব্রাহ্মনকান্দা গ্রামের বাসিন্দা আতিকুর কাজীকে পুখুরিয়া রেলস্টেশন এলাকায় কুপিয়ে জখম করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) ফাহিমা কাদের চৌধুরী বলেন, সংঘর্ষের খবর শুনে পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।