ম্যানচেস্টার ডার্বিতে ঐতিহ্যবাহী ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে পাত্তাই দিলো না ম্যানচেস্টার সিটি। একের পর এক গোল করে দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়লো পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা। ফিল ফোডেন ও আর্লিং হালান্ডের হ্যাটট্রিকে ইউনাইটেডের জালে ছয়টি গোল দিলো সিটিজেনরা।
বিপরীতে ইউনাইটেডও অবশ্য দিয়েছে তিন গোল। তাতে ম্যাচের ফলাফলে কোনো পরিবর্তন আসেনি। রোববার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় ম্যান সিটির ঘরের মাঠে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ৬-৩ গোলে জিতেছে স্বাগতিকরা। ম্যানচেস্টার ডার্বির ১৮৭ ম্যাচের ইতিহাসে এতো বেশি গোল হয়নি আর কোনো ম্যাচে।
শুধু তাই নয়, এ নিয়ে টানা আটটি হোম ম্যাচে তিনের বেশি গোল করলো ম্যান সিটি। এর আগে একমাত্র দল হিসেবে টটেনহ্যাম হটস্পার ১৯৬৫ সালে নিজেদের ঘরের মাঠে টানা আট ম্যাচে তিন বা তার বেশি গোলের কৃতিত্ব দেখিয়েছিল। সে রেকর্ডেও নাম তুললো ম্যান সিটি।
ইউনাইটেডের জালে এ নিয়ে তৃতীয়বার ছয় গোল দিলো সিটিজেনরা। তবে প্রথমবার ঘরের মাঠে এ কৃতিত্ব দেখালো তারা। আগের দুইবারই (১৯২৬ সালে ৬-১ ও ২০১১ সালে ৬-১) ইউনাইটেডের মাঠে গিয়ে ছয় গোল দেওয়ার নজির গড়েছিল তারা।
এ নিয়ে প্রিমিয়ার লিগে ম্যান সিটির বিপক্ষে ১৮টি ম্যাচ হারলো ইউনাইটেড। প্রিমিয়ার লিগে কোনো নির্দিষ্ট দলের বিপক্ষে তাদের সমান ১৮টি হার রয়েছে চেলসি ও লিভারপুলের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইয়ে। এছাড়া ইউনাইটেডকে প্রিমিয়ার লিগে টানা তিন ম্যাচে হারালো ম্যান সিটি।
লিগে টানা চার হারের পর আবার টানা চার জয়ের সুখস্মৃতি নিয়েই ম্যান সিটির মুখোমুখি হয়েছিল ইউনাইটেড। কিন্তু তাদেরকে ধরাশায়ী করেই মাঠ ছেড়েছেন ফিল ফোডেন, আর্লিং হালান্ডরা। পুরো ম্যাচে গোলের জন্য ২২টি শট করে সিটি। যার মধ্যে লক্ষ্যে ছিল ১০টি আর গোল হয়েছে ছয়টি।
ম্যাচের প্রথমার্ধেই চার গোল করে ইউনাইটেডকে কোণঠাসা করে ফেলে ম্যান সিটি। মাত্র অষ্টম মিনিটেই দলকে এগিয়ে দেন সিটিজেনদের স্টারবয় ফোডেন। পরের গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয় ৩৪ মিনিট পর্যন্ত। এবার স্কোরশিটে নাম তোলেন গোলমেশিন পরিচয় পাওয়া হালান্ড।
তিন মিনিটের মধ্যে আবার ইউনাইটেডের জাল কাঁপান এ নরওয়েজিয়ান তরুণ। তার দেখাদেখি বিরতির আগে আরও একবার গোলের তালিকায় নাম তোলেন ফোডেন। দুই তরুণের জোড়া গোলে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় সিটিজেনরা।
দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে ৫৬ মিনিটে অ্যান্টনির গোলে ব্যবধান কমায় ইউনাইটেড। তবে ৬৪ মিনিটে আবার গোল করে নিজের হ্যাটট্রিক তুলে নেন হালান্ড। চলতি মৌসুমে এটি তার তৃতীয় হ্যাটট্রিক। এর মিনিট দশেক পর ম্যাচের দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক করেন ফোডেন।
ম্যাচের ৭৫ মিনিটের মধ্যেই ৬-১ গোলে এগিয়ে যাওয়ায় একসঙ্গে পাঁচ খেলোয়াড় পরিবর্তন করেন পেপ গার্দিওলা। এরপর আরও দুই গোল করে পরাজয়ের ব্যবধান কমায় ইউনাইটেড। ম্যাচের ৮৪ মিনিটে দ্বিতীয় ও অতিরিক্ত যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে আরেকটি গোল করেন অ্যান্থনি মার্শিয়াল।
এ ইতিহাসগড়া জয়ের পরেও অবশ্য টেবিলের শীর্ষে উঠতে পারেনি ম্যান সিটি। আট ম্যাচে ছয় জয় ও দুই ড্রয়ে ২০ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে রয়েছে তারা। সমান ম্যাচে ২১ পয়েন্ট পাওয়া আর্সেনাল রয়েছে সবার ওপরে। অন্যদিকে সাত ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে ইউনাইটেড ছয় নম্বরে।
বাংলাপেইজ/এএসএম