খালেদ মাসুদ রনি:
বিভিন্ন অনুষ্টানের মধ্যে দিয়ে বৃটেনের মাটিতে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে।বাংলাদেশের বাহিরে প্রবাসের মাটিতে ব্যতিক্রমী ও বিশাল আয়োজনে দিবসটিকে পালন করা হয়।দিবসটিতে ব্রিটিশ এমপি,মেয়র,স্পীকার,কাউন্সিলার ছাড়াও শিশু কিশোর থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের উপস্থিতি ছিলো লক্ষনীয়।এবারের আলোচনায় বাংলা ভাষা কিভাবে এ প্রজন্মের ব্রিটিশ বাংলাদেশীদের কাছে পৌছানো যায় তার উপর জোর দিয়েছেন আলোচকরা।২০শে ফেব্রুয়ারি রবিবার সন্ধ্যা ৭ টায় প্রথম ইস্ট লন্ডনের ব্রাডি আর্ট সেন্টারে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের আয়োজনে অমর একুশে ও অহংকারের ৭০ বছর শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্টান অনুষ্টিত হয়।

রাত সাড়ে ৮ টায় বৃটেনের বাংলাদেশ সেন্টারের আয়োজনে অনুষ্টিত হয় একুশের আলোচনা সভায়।সভার শুরুতে অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম।বৈরী আবহাওয়ার কারনে রবিবার রাতে লন্ডন শহরের হোয়াইচ্যাপলস্থ আলতাব আল পার্কের শহীদ মিনারের অনুষ্টান বাতিল করা হয়।সকালে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় পপলার এবং লাইম হাউসের এমপি আফসানা বেগম,টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র জন বিগস ও স্পীকার আহবাব হোসেন,কাউন্সিলাররা সাবিনা বেগম উপস্থিত হয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।পরে লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাব,লন্ডন এন্টার প্রাইজ একাডেমী স্কুল,একুশে প্রভাতফেরী পরিষদ যুক্তরাজ্য শাখা,চ্যানেল এস,ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটিসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাননো হয়।এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে শহীদদরে প্রতি শ্রদ্ধা জানাননো হয়।
এর আগে সকাল ১০ টায় লন্ডন এন্টার প্রাইজ একাডেমী নামে স্কুলের পক্ষ থেকে স্কুলের হল রোমে আলোচনা,সাংস্কৃতিক অনুষ্টান ও প্রতিযোগিতা অনুষ্টিত হয়।এসময় তাদের মাঝে তুলে ধরা হয় বাংলা ভাষার ইতিহাস।একই সময় বেতনালগ্রীনের রিকমিক সেন্টারে অনুষ্টিত হয় আলোচনা সভা।সোমবার রাতে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন বিশাল আয়োজনে তারা হোটেলে অমর একুশের আলোচনা সভার আয়োজন করে।আলোচনা পৃর্বে হোটেলের হল রোমের অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান লন্ডনস্থ বাংলাদেশের হাইকমিশনারসহ বিভিন্ন দেশের হাইকমিশনাররা।অনুষ্টানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের উপস্থিতি ছিলো লক্ষনীয়।অনুষ্টানে শিল্পী গৌরি চৌধুরী`র নেতৃত্বে ১২ টি ভাষায় অমর একুশের গান সকলের নজর কাড়ে।এছাড়াও বিভিন্ন দেশের শিল্পীরা গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন।

এদিকে,লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের অহংকারের ৭০ বছর শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি এমদাদুল হক চৌধুরী।সাধারণ সম্পাদক তাইসির মাহমুদ ও সায়েম চৌধুরীর যৌথ সঞ্চালনায় আলোকরা বলেন”প্রবাসে মাতৃভাষা চর্চাকে আরও সুদৃঢ় করতে এবং মাতৃভূমির সঙ্গে পরবর্তী প্রজন্মের মেলবন্ধন তৈরি করতে ভাষা শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম।বাঙালি পরিবারে বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতি চর্চায় নিবিড় মনোযোগ ছেলে-মেয়েদের মেধা বিকাশের জন্যও বিশেষ সহায়ক”।প্রবাসে বাংলা ভাষা চর্চা ও টিকিয়ে রাখার জন্য অভিবাবক,শিক্ষার্থী,শিক্ষক,কাউন্সিলসহ সকলকে এক সাথে কাজ করার তাগিদ দেন বক্তারা।সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রবাসেও বাংলা ভাষার সম্বৃদ্ধি হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি গানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।

অনুষ্ঠানে ক্লাব সভাপতি এমদাদুল হক চৌধুরী সূচনা বক্তব্যে বিলেতে বাংলা ভাষার বিকাশে কমিউনিটি সংবাদপত্রের অবদানকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।বিলেতে বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা তুলে ধরেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও গবেষক ডঃ মো. আব্দুল হান্নান।আলোচনায় আরও অংশ নেন সাংবাদিক ও কলামিষ্ট মিজানুর রহমান খান,চ্যানেল এসের অনুষ্ঠান প্রধান ফারহান মাসুদ খান এবং টিভি ওয়ানের প্রযোজক ও উপস্থাপক জিয়াউর রহমান সাকলাইন।মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন ক্লাবের তিন সাবেক সভাপতি যথাক্রমে সৈয়দ নাহাস পাশা,নবাব উদ্দিন ও বেলাল আহমেদ,মিডিয়া ব্যক্তিত্ব উর্মি মাজহার, ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ জুবায়ের,সাবেক কোষাধ্যক্ষ আ স ম মাসুম,নজরুল ইসলাম আকিব।এছাড়াও অনুষ্ঠানে ভাষা শহীদদের পরিচিতি তুলে ধরেন ক্লাবের নির্বাহী সদস্য নাজমুল হোসেন।অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন তাজ একাউন্টেন্ট ও সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তাক আলী বাবুল।