Thursday, March 28, 2024
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
Homeবাংলাদেশঢাকাগাঁজা সেবন কেন্দ্র করে জাহিদ খুন : গ্রেফতার ৪

গাঁজা সেবন কেন্দ্র করে জাহিদ খুন : গ্রেফতার ৪

রাজধানীর পল্লবী এলাকায় জুনিয়র গ্রুপের সদস্য জাহিদ হাসান হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। তারা হলেন- মো. ইফরান ওরফে ডামরু, মো. ডলার হোসেন, মো. রাজা হোসেন ও মো. কোরবান।শনিবার রাজধানীর পল্লবী, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা সবাই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছেন। চাঁদাবাজিসহ মাদক (গাঁজা) সেবনকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকান্ড হয়েছে বলে তারা জানিয়েছে।

রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক।তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা সবাই বিহারি। তবে নিহত জাহিদ হাসান ছিলেন বাঙ্গালি। গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে পল্লবীর ব্লক-সি, কাঁচা বাজার পেয়াজ পট্টি এলাকায় দুষ্কৃতিকারীরা তাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা হানিফ খান বাদী হয়ে পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

নিহত জাহিদ পল্লবীর বেনারসিপল্লী এলাকায় সপরিবারে থাকতেন। তিনি মূলত পেশায় একজন বাসচালক ছিলেন। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে যানবাহন চলাচল সীমিত হওয়ায় পেশা পরিবর্তন করে মাছ ব্যবসা শুরু করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত ও এক সন্তানের জনক।জাহিদ ও গ্রেফতার চারজন একই এলাকার বাসিন্দা। এলাকাটি বিহারি ক্যাম্পের (জল্লা ক্যাম্প, মুসলিম ক্যাম্প ও মিল্লাত ক্যাম্প) আওতাধীন। ওই এলাকায় মাদকের আড্ডাসহ গ্যাং কালচারের প্রবণতা রয়েছে।

এ এলাকায় সিনিয়র গ্রুপ ও জুনিয়র গ্রুপ নামে দুইটি গ্রুপ রয়েছে। যারা এলাকায়চুরি-ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসা করে থাকে। গ্রুপ দুইটি এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সার্বক্ষণিক দাঙ্গা-হাঙ্গামা করে থাকে। জাহিদ জুনিয়র গ্রুপের সদস্য। গ্রেফতারকৃতরা সিনিয়র গ্রুপের সদস্য। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় প্রথমে জুনিয়র গ্রুপ সিনিয়র গ্রুপের ইমরানের সঙ্গে গাঁজা সেবনকে কেন্দ্র করে বাকবিতন্ডা করেন। এ সময় জুনিয়র গ্রুপের ৫/৬ জন সদস্য ইমরানকে চর-থাপ্পর মারেন।

এরপর সিনিয়র গ্রুপের প্রধান ডামরু ও ডলারের নেতৃত্বে রাত ১০টার দিকে সিনিয়র গ্রুপের ১৫/১৬ জন সদস্য দেশীয় অস্ত্র (ছুরি, সুইস গিয়ার, হকিস্টিক, এসএস পাইপ, লোহার রড) নিয়ে কাঁচাবাজার পেঁয়াজপট্টি এলাকায় জুনিয়র গ্রুপের ৫/৬ জনের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। হামলায় অংশ নেয় আসামি মিঠুন, কামরান, ডলার, রাজা ও কোরবানসহ আরও কয়েকজন। মিঠুন, ডলার ও কামরানের এলোপাতাড়ি আঘাতে জাহিদ ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।
এসময় ডামরু তার হাতে থাকা ধারালো সুইস গিয়ার (চাকু) দিয়ে জাহিদের পেটে আঘাত করেন। এতে তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। জাহিদ ছাড়াও জুনিয়র গ্রুপের সদস্য কামরান ও হাসান গুরুতর আহত হন।

পরে স্থানীয় লোকজন জাহিদসহ আহতদের নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যান। আহতদের মধ্যে জাহিদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক জাহিদকে মৃত ঘোষণা করেন।

র‌্যাব কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক আরও বলেন, গ্রেফতারডামরু পল্লবী জল্লাক্যাম্পে বসবাস করেন। তিনি জুতার কারখানায় কাজ করলেও এলাকায় সিনিয়র গ্রুপের নেতা হিসেবে চুরি-ছিনতাই ও মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত। তিনি নিজেও একজন মাদকসেবী। গ্রেফতার ডলার পল্লবী জল্লাক্যাম্পে বসবাস করেন। তিনি স্থানীয় একটি স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। পরে ডিমের দোকানের কর্মচারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। তিনি সিনিয়র গ্রুপের সক্রিয় সদস্য ও বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সেবন করে থাকেন।

গ্রেফতার রাজা পল্লবী মুসলিম ক্যাম্পে বসবাস করেন। তিনি স্থানীয় একটি কলেজ থেকে ২০১৯ সালে বিএ পাশ করে একটি এনজিওতে মাঠকর্মী হিসেবে চাকরি করেন। তিনিও সিনিয়র গ্রুপের একজন সক্রিয় সদস্য। গ্রেফতার কোরবান পল্লবী জল্লাক্যাম্পে বসবাস করেন। তিনি মিষ্টির দোকানে কাজ করলেও এলাকায় সিনিয়র গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। এছাড়া চুরি-ছিনতাই ও মাদক কারবারিতে জড়িত। তিনি নিজেও মাদকসেবী। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments