Monday, November 4, 2024
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
Homeসিলেট সংবাদসুনামগঞ্জে প্রবাসীর স্ত্রীকে ছয় টুকরোহত্যা: আদালতে দায় স্বীকার

সুনামগঞ্জে প্রবাসীর স্ত্রীকে ছয় টুকরো
হত্যা: আদালতে দায় স্বীকার


সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় একটি ওষুধের দোকান থেকে এক নারীর (৩৫) ছয় টুকরা লাশ উদ্ধারের ঘটনায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার জিতেশ গোপ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেলে সুনামগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইয়েদ মাহবুবুল ইসলামের আদালতে জবানবন্দি দেন তিনি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক লিটন দেওয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত রোববার জিতেশ গোপসহ গ্রেপ্তার তিন আসামিকে দ্বিতীয় দফায় তিন দিনের রিমান্ডে নেয় সিআইডি। এর আগে ১৭ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর শহরের অভি মেডিকেল হল ফার্মেসি থেকে ওই নারীর ছয় টুকরা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরের দিন ওই নারীর ভাই বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলার পর সিআইডি অভি মেডিকেল হলের মালিক জিতেশ চন্দ্র গোপ (৩০), কিশোরগঞ্জের ইটনার অনজিৎ চন্দ্র গোপ (৩৮) ও নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের অসীত গোপকে (৩৬) গ্রেপ্তার করে। ২০ ফেব্রুয়ারি তাঁদের আদালতের মাধ্যমে আট দিনের রিমান্ডে নেয় সিআইডি।
মামলার অভিযোগ ও সিআইডির ভাষ্য অনুযায়ী, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানিয়েছেন, ২০১৩ সাল থেকে জগন্নাথপুর পৌর এলাকায় দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন ওই নারী। তার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরব থাকেন। পরিবারের সব সদস্যের ওষুধ জিতেশের মালিকানাধীন অভি মেডিকেল হল ফার্মেসি থেকে কেনার সুবাদে জিতেশের সঙ্গে তাঁর সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। ভুক্তভোগী কিছুদিন ধরে গোপনীয় শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন।
এ জন্য ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে জিতেশের ফার্মেসিতে এলে তাকে ফার্মেসির ভেতরে প্রাথমিক চিকিৎসাকক্ষে বসিয়ে রাখা হয়। ভিড় কমলে তাঁর সঙ্গে কথা বলে ওষুধ দেওয়া হবে বলে সময়ক্ষেপণ করা হয়। এদিকে জিতেশ তার বন্ধু মুদিদোকানদার অনজিৎ ও পাশের অরূপ ফার্মেসির মালিক অসীতকে ফার্মেসিতে অপেক্ষায় রাখা নারীর বিষয়ে বললে তারা তাকে ধর্ষণের পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনা মোতাবেক জিতেশ ওই নারীকে চিকিৎসার কথা বলে ঘুমের ওষুধ দেন এবং তা খাওয়ার পর সেখানেই ঘুমিয়ে যান তিনি। তাঁকে ফার্মেসির ভেতর রেখেই তালা দিয়ে চলে যান জিতেশ। সব দোকান বন্ধ হলে এবং রাত আরও গভীর হলে তারা পুনরায় তালাবদ্ধ ফার্মেসি খুলে ভেতরে এনার্জি ড্রিংকস পান করেন।
তারপর তারা ওই নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের বিষয়টি ওই নারী প্রকাশ করার কথা বললে আসামিরা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তারা ভুক্তভোগীর পরনের ওড়না গলায় পেঁচিয়ে এবং বিশ্রামকক্ষে থাকা বালিশ দিয়ে মুখে চেপে ধরে হত্যা করেন।
ধারালো ছুরি দিয়ে তারা ওই নারীর লাশটি ছয়টি অংশে বিভক্ত করেন। দোকানে থাকা ওষুধের কার্টন দিয়ে খণ্ডিত অংশগুলো ঢেকে রেখে ফার্মেসি তালা দিয়ে তাঁরা চলে যান। সুবিধাজনক সময়ে লাশের খণ্ডিত অংশগুলো মাছের খামারে ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের বলে জানায় সিআইডি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img

Most Popular

Recent Comments