চরম সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া ২০ কোটি ডলার ঋণ ফেরতের সম্ভাবনা কম। এ পরিস্থিতিতে ওই ঋণ পরিশোধে আরও এক বছর সময় বৃদ্ধি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রোববার (৮ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলে বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
একই বৈঠকে আইনি সীমার অতিরিক্ত ঋণ দেওয়ায় বেসরকারি ইস্টার্ন ব্যাংককে (ইবিএল) করা জরিমানা মওকুফের আবেদন নাকচ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক, ডেপুটি গভর্নর ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের নির্বাহী পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে উপস্থিত থাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া ২০ কোটি ডলার ঋণ ফেরতের জন্য তাদের চাপাচাপি করে কোনো লাভ হবে না। এ ঋণ পরিশোধে আরও এক টেনিয়র (বছর) সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশ থেকে নেওয়া ২০ কোটি ডলার ঋণ পরিশোধে আরও এক বছর সময় পাবে দেশটি।
বাংলাদেশ ব্যাংক এবং সেন্ট্রাল ব্যাংক অব শ্রীলঙ্কার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় (দেশটির সরকারের গ্যারান্টি) কারেন্সি সোয়াপ চুক্তির আওতায় দেশটির অনুকূলে তিন দফায় ২০ কোটি ডলার ছাড় করা হয়েছে। তিন মাস মেয়াদি কারেন্সি সোয়াপ হলেও এক বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে চুক্তিতে। এর ফলে তিন মাস পরপর এক বছর পর্যন্ত এ ঋণের মেয়াদ এমনিতেই বাড়বে। তবে লন্ডন আন্তঃব্যাংক অফার রেট বা লাইবরের সঙ্গে দেড় শতাংশ সুদ পাবে বাংলাদেশ। অর্থ ছাড়ের পর থেকে এর সুদহার ও ঋণ পরিশোধের সময় হিসাব করা হবে।
এর আগে প্রথম দফায় ২০২১ সালের ১৯ আগস্ট ৫ কোটি ডলার ছাড় করে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই বছরের ৩০ অক্টোবরে দ্বিতীয় দফায় ১০ কোটি ডলার দেওয়া হয় এবং গত নভেম্বরে বাকি ৫ কোটি ডলার দেওয়া হয় শ্রীলঙ্কাকে। দেশটিকে দেওয়া ঋণের পরিমাণ ২০ কোটি ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় এক হাজার ৭২৪ কোটি টাকা। যে দিন থেকে যে অর্থ ছাড় করা হয়েছে, সে দিন থেকে মেয়াদ হিসাব করা হবে। ফলে বিদ্যমান চুক্তির আওতায় চলতি ২০২২ সালের আগস্ট, অক্টোবর ও নভেম্বরের মধ্যে সুদসহ অর্থ ফেরত দিতে হবে দেশটিকে। তবে নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগের সময়ের সঙ্গে এখন আরও এক বছর যুক্ত হবে।
এদিকে সীমার অতিরিক্ত ঋণ দেওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক ইস্টার্ণ ব্যাংককে গত ৩ এপ্রিল পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল। জরিমানার ওই অর্থ ১৪ দিনের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছিল। পরিশোধ না হলে ব্যাংকটির হিসাব থেকে কেটে নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চিঠিতে। তবে তারা জরিমানার অর্থ পরিশোধ না করে তা মওকুফের আবেদন করে। আজকের বৈঠকে আবেদনটি বাতিল করা হয়।