নিজস্ব প্রতিবেদক:: সিলেটের বিশ্বনাথে পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘুষ না দেয়ায় এক যুক্তরাজ্য প্রবাসীকে গাছ কাটা ও চুরির মামলা দায়ের করেছেন উপজেলার প্রয়াগমহল ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী (ভূমি) কর্মকর্তা খালেদ আহমদ। গত ২৭ ফেব্রুয়ারী যুক্তরাজ্য প্রবাসীকে এককভাবে আসামী করে মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলার আসামী হলেন, উপজেলার খাজাঞ্চি ইউনিয়নের দ্বীপবন্ধ (বিলপার) গ্রামের মৃত হরমান আলীর ছেলে যুক্তরাজ্য প্রবাসী হাজী ইন্তাজ আলী (৭০)। তবে, উপ-সহকারী (ভূমি) কর্মকর্তাকে পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘুষ না দেয়ায় প্রবাসীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তিনি মামলাটি দিয়েছেন বলে দাবী করেছেন এলাকাবাসী। এ ঘটনায় সাবেক ইউপি সদস্য সিরাজ উদ্দিন, খাজাঞ্চি ইউনিয়নের প্রয়াগমহল ইউনিয়ন (ভূমি) অফিসের উপ-সহকারী খালেদ আহমদকে অভিযুক্ত করে এবং ষড়যন্ত্রমূলক মামলার প্রতিকার চেয়ে গত ৮মার্চ মঙ্গলবার বিকেলে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে ৬০জন স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন এলাকাবাসী।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ আছে, খাজাঞ্চি ইউনিয়নের দ্বীপবন্ধ (বিলপার) গ্রামের মৃত হরমান আলীর ছেলে হাজী ইন্তাজ আলী দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাস করে আসছেন। তাঁর বয়োবৃদ্ধ বোন এই বাড়ীতে থাকেন। তিনি প্রায় ২০বছর পূর্বে তাদের নদী ভাঙ্গনে যাওয়া চর ভরাট ভূমিতে কয়েকটি গাছ রোপন করেন। সেই গাছগুলি গত ২বছর পূর্বে তিনি বিক্রিও করে দেন। গত ২২ ফেব্রুয়ারী ক্রেতা তার ক্রয়কৃত গাছ কাটা শুরু করেন। খবর পেয়ে সাবেক সদস্য সিরাজ উদ্দিনকে সাথে নিয়ে উপ-সহকারি (ভূমি) কর্মকর্তা খালেদ আহমদকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মামলার ভয় দেখিয়ে পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন এবং উপ-সহকারী খালেদকে আরও পঞ্চাশ হাজার টাকা দেয়ার প্রস্তাব দেন। পরদিন ইন্তাজ আলী তার স্ত্রী ও বৃদ্ধা বোনকে সাথে নিয়ে বিশ্বনাথ সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসমা জাহান সরকারের অফিসে গেলে তিনি আইনগতভাবে সবকিছু করা হবে মর্মে বিভিন্ন ধরণের অশালীন কথাবার্তা বলে তাদেরকে অফিস থেকে বের করে দেন। যুক্তরাজ্য প্রবাসী ভূমি কর্মকর্তাকে বলেন, আমি এই গাছ রোপনও করিনি এবং বিক্রিও করিনি। প্রয়োজনে গাছগুলো বিক্রি করে দেন, না হয় উপযুক্ত মূল্য সরকারের কোষাগারে জমা দিয়ে দিবে আমার বোন। কিন্তু আমি কাউকে ঘুষ দিতে পারব না। পরদিন (ভূমি) কর্মকর্তা সরেজমিন গিয়ে তদন্ত করে এসে প্রবাসী ইন্তাজ আলীকে একমাত্র আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ আছে, প্রবাসী ইন্তাজ আলী দেশে আসার পর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সিরাজ উদ্দিন গত ৩১জানুয়ারী খাজাঞ্চি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের খরচের জন্য পঞ্চশ হাজার টাকা ঋণ চেয়েছিলেন। এই টাকা না দেয়ায় স্থানীয় তপশীল অফিসের দুর্ণীতিবাজ কর্মকর্তা খালেদ আহমদ ও ইউপি সদস্য সিরাজ উদ্দিন ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই মামলাটি দায়ের করেন। অথচ কর্তনকৃত লাকড়ী এখনও নিদিষ্ট স্থানে পড়ে আছে। এধরনের সাজানো একটি মামলায় এলাকার মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এলাকাবাসী স্মারকলিপিতে অতিসত্ত্বর প্রবাসী রেমিটেন্সযোদ্ধার বিরুদ্ধে সাজানো মামলা প্রত্যাহার ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবী জানান।
এ ব্যাপারে সহকারি কমশিনার (ভূমি) সাংবাদিকদের জানান, আমার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের আনিত অভিযোগটি সঠিক নয়।